অনলাইন ডেস্ক: চাঁদের বুকে অবতরণের ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হলো ভারত তথা গোটা বিশ্ব। ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফট ল্যান্ডিং করে দেশটির ‘চন্দ্রযান ৩’-এর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’।

চাঁদে মহাকাশযান ‌‘চন্দ্রযান-৩’ এর অবতরণের অপেক্ষায় ছিল গোটা ভারত। সম্মানজনক এ অর্জনের দিনে দেশটির দিকে নজর ছিল বিশ্বের। অবশেষে চাঁদের বুকে অবতরণ করল ‘চন্দ্রযান-৩’। এরই মধ্য দিয়ে চাঁদে অবতরণকারী বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে নাম লেখাল ভারত। এর আগে কেবল যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের মহাকাশযান নিরাপদে চাঁদের মাটিতে নামতে পেরেছে।

বিকেল ৫টা ২০ মিনিট থেকে বিক্রমের অবতরণের সরাসরি সম্প্রচার শুরু করে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)।

৩০ কিলোমিটার উচ্চতা থেকে চাঁদের মাটিতে নামতে ১৯ মিনিট সময় লাগে বিক্রমের। এই ১৯ মিনিটে ধাপে ধাপে এর গতি এবং উচ্চতা কমানো হয়। ভারতীয় সময় ঠিক সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে চাঁদের মাটিতে পা রাখে ল্যান্ডারটি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ব্রিক্‌স সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় রয়েছেন। বুধবার সেখান থেকেই তিনি বিক্রমের অবতরণ প্রত্যক্ষ করেন। ইসরোর সরাসরি সম্প্রচারে চোখ রাখেন মোদি।

২০১৯ সালের ‘চন্দ্রযান-২’ মিশন সেভাবে সফল হতে না পারলেও এবার ‘চন্দ্রযান-৩’ নিয়ে বড় প্রত্যাশায় ছিলেন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইসরো) বিজ্ঞানীরা।

‘চন্দ্রযান-৩’ এর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে অবতরণ করেছে। চাঁদের দক্ষিণ মেরুর তথ্য এখনো অজানা রয়েছে। চন্দ্রযান-৩ সফল হওয়ায় চাঁদের রহস্যময় দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছাতে পারা প্রথম দেশ হলো ভারত।

এর আগে চন্দ্রযান-২ এর ল্যান্ডারের নামও রাখা হয়েছিল বিক্রম। দেড় হাজার কেজি ওজনের চন্দ্রযান-৩ এর এ ল্যান্ডার তার পেটের মধ্যে বহন করছে ২৬ কেজি ওজনের রোভার বা রোবটযান প্রজ্ঞানকে।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ইসরোর প্রতিষ্ঠাতা বিক্রম সারাভাইয়ের (১৯১৯-১৯৭১) নামানুসারে এই ল্যান্ডারের নামকরণ। ভারতীয় এই জ্যোতির্বিদ দেশটির মহাকাশ গবেষণার উদ্যোগের পাশাপাশি পারমাণবিক শক্তি উন্নয়নে অবদান রেখেছিলেন। তাঁকে ভারতের ‘মহাকাশ কর্মসূচির জনক’ বলা হয়ে থাকে। ১৯৬৬ সালে তিনি পদ্মভূষণ ও ১৯৭২ সালে মরণোত্তর পদ্মবিভূষণ খেতাব লাভ করেন।

ছয় চাকার প্রজ্ঞান চাঁদের পৃষ্ঠে ঘুরে ঘুরে পৃথিবীতে পাঠাবে তথ্য আর ছবি। চন্দ্রপৃষ্ঠের রাসায়নিক গঠন বিশ্লেষণ এবং পানির সন্ধান করবে। এই রোভার সক্রিয় থাকবে চাঁদের এক দিন, যা পৃথিবীর ১৪ দিনের সমান।

৩ হাজার ৯০০ কেজি ওজনের চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযান তৈরি হয়েছে অরবিটার, ল্যান্ডার ও রোভার- এই তিনটি অংশ নিয়ে।
– ইনডিপেনডেন্ট